All About BCS Examination

All About BCS Examination

বিসিএস পরীক্ষা বা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা হল দেশব্যাপী পরিচালিত একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা যা বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি) কর্তৃক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিসিএস (প্রশাসন), বিসিএস (কর), বিসিএস (পররাষ্ট্র) ও বিসিএস (পুলিশ) সহ ২৬ পদে কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য পরিচালিত হয়। যা পূর্বে ২৭টি ছিল, ২০১৮ সালে ইকোনমিক ক্যাডারকে প্রশাসন ক্যাডারের সাথে একত্রিত করে।বিসিএস(BCS)পরীক্ষা All About BCS Examination 

All About BCS Examination

বিসিএস পরীক্ষা পর্যায়ক্রমে তিনটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয়- প্রাথমিক পরীক্ষা (এমসিকিউ), লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষা (ইন্টারভিউ)। প্রতিটি ধাপের জন্য আলাদা সিলেবাস আছে। তাই বিসিএস ( BCS) পরীক্ষা A to Z ভালোভাবে জেনে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়। বিসিএস পরীক্ষা বেশ সময়সাপেক্ষ এবং ক্ষেত্রবিশেষে জটিল ও বটে। এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে আপনাকে ৩ বার পরীক্ষা দিতে হবে। তার মানে যমের সামনে একবার নয় তিন, তিনটি বার পড়তে হবে।বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আপনার হয়ত “পরীক্ষা” সিস্টেমকে গালি দিতে ইচ্ছা হবে। বলে রাখি “পরীক্ষা” আবিষ্কার করেছিলেন হেনরি ফিশেল নামের এক আমেরিকান ব্যবসায়ী। ভদ্রলোক গত হয়েছেন বেশ কয় বছর আগে। All About BCS Examination 

All About BCS Examination

সুতরাং ভদ্রলোককে ভাল-মন্দ বলে কোন লাভ নেই। বরং চলুন বিসিএস পরীক্ষা পদ্ধতির ধরণ দেখে নেই। বিসিএস ( BCS) পরীক্ষা A to Z বিসিএস পরীক্ষাকে বাংলাদেশে চাকরি প্রার্থীদের জন্য অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা  হিসাবে বিবেচনা করা হয়। প্রতি বছর গড়ে ৩,৫০,০০০ থেকে ৪,০০,০০০ প্রার্থী আবেদন করে, যা বছরের চাকরি প্রার্থীদের প্রায় ৯০% । পরীক্ষায় সকল ক্যাডার মিলে গড় সাফল্যের হার ০.০২% এবং সাধারণ ক্যাডারের ক্ষেত্রে যা ০.০০৫% শতাংশ, যদিও প্রতি বছর এ হার পরিবর্তিত হয়। All About BCS Examination 

প্রথম ধাপঃ প্রিলিমিনারি পরীক্ষা।

এই পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন থাকে। মানে, প্রতিটি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য ৪টি অপশন দেয়া থাকে। আপনাকে যেকোন একটি উত্তর করতে হয়। একটি OMR শিটে প্রশ্নের সঠিক অপশনে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ০১। তবে প্রতিটি ভুল প্রশ্নের জন্য জরিমানা গুণতে হবে ০.৫০।বিসিএস এ অনেক বেশি সংখ্যক প্রার্থী আবেদন করেন। এই সংখ্যা কমানোর জন্য প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষাই হল প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এই পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর পরের ধাপ গুলোতে যোগ হয় না। প্রিলিতে টিকলে পরের ধাপ অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হয়।

প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মোট ১০ টি বিষয়ে ২০০ নম্বর থাকে।

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বিষয় ও মানবন্টনঃ

বিষয়ের নাম নম্বর
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ৩৫
ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য ৩৫
বাংলাদেশ বিষয়াবলী ৩০
আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলী ২০
ভূগোল,পরিবেশ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ১০
সাধারণ বিজ্ঞান ১৫
কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি ১৫
গাণিতিক যুক্তি ১৫
মানসিক দক্ষতা ১৫
নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন ১০
মোট নম্বর ২০০

দ্বিতীয় ধাপঃ লিখিত পরীক্ষা।

লিখিত পরীক্ষা থেকে বিসিএস এর মূলযাত্রা শুরু। মোট ৯০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। লিখিত পরীক্ষায় একজন প্রার্থী চাইলে বাংলা অথবা ইংরেজি দুই ভাষায়ই উত্তর লিখতে পারবেন। ব্যাপারটা এমন না যে, আমি ইংরেজিতে লিখলে আমাকে বেশি নম্বর দেয়া হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর ভাষার উপর নয় বরং লেখার মানের উপর নির্ভর করে। লিখিত পরীক্ষা সাধারণ ক্যাডার এবং কারিগরি ক্যাডারের জন্য আলাদা হয়।

সাধারণ ক্যাডারের বিষয় ভিত্তিক মানবন্টনঃ

আবশ্যিক বিষয়ের নাম নম্বর
বাংলা ২০০
ইংরেজি ২০০
বাংলাদেশ বিষয়াবলী ২০০
আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলী ১০০
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ১০০
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০০
মোট নম্বর ৯০০

কারিগরি ক্যাডাররের বিষয় ভিত্তিক মানবন্টনঃ

আবশ্যিক বিষয়ের নাম নম্বর
বাংলা ১০০
ইংরেজি ২০০
বাংলাদেশ বিষয়াবলী ২০০
আর্ন্তজাতিক বিষয়াবলী ১০০
গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা ১০০
পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয় ২০০
মোট নম্বর ৯০০

তৃতীয় ধাপঃ ভাইভা পরীক্ষা।

বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। মৌখিক পরীক্ষার গড়পাস নম্বর ৫০%।

বিসিএস ভাইভা বোর্ড কিভাবে গঠন করা হয়?

প্রার্থীদের উপযুক্ততা নির্ধারণের জন্য বিসিএস পরীক্ষা বিধিমালা (২০১৪) অনুযায়ী BPSC নিম্নোক্তভাবে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ড গঠন করে থাকে-

১.কমিশনের চেয়ারম্যান/সদস্য-বোর্ড চেয়ারম্যান।

২.সরকার কর্তৃক মনোনীত যুগ্মসচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তা-বোর্ড সদস্য।

৩.কমিশন কর্তৃক মনোনীত বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ-বোর্ড সদস্য।

এই তিন সদস্যের এক বা একাধিক সদস্য নিয়ে ভাইভা বোর্ড গঠন করা হয়। সাধারণ ১৫টি বোর্ড গঠন করা হয়।

লিখিত ও ভাইবা পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের উপর ভিত্তি করে বিপিএসসি একজন প্রার্থীকে ক্যাডারে সুপারিশ করে।

চূড়ান্ত ভাবে নিয়োগ পাওয়ার আগে প্রত্যেক ক্যাডারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং এনএসআই  (জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা) ভেরিফিকেশন করা হয়। এই ৩ টি পরীক্ষায় উতরে গেলে ক্যাডাররা গেজেটেড ভুক্ত হন।

বিসিএসে যাঁরা ক্যাডার সার্ভিসের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হোন না, তাঁদের অনেকেই নন-ক্যাডার হিসেবে চাকরির সুযোগ দেয়া হয়।বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) দুই ধরনের নিয়োগ প্রদান করে থাকে—

১. বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাডার সার্ভিসের চাকরি (মোট ১৫০০ নম্বরের পরীক্ষা),

২. অন্যান্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নন-ক্যাডারে নিয়োগ (মোট ৪০০ নম্বরের পরীক্ষা)।

বিসিএস উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নন, এমন প্রার্থীদের নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা-২০১০ ও সংশোধিত বিধিমালা (২০১৪) অনুযায়ী নন-ক্যাডারে প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে সুপারিশ করা হচ্ছে। এতে বিসিএস উত্তীর্ণ মেধাবীরা ক্যাডার না পেলেও নন-ক্যাডারের চাকরিতে নিয়োগ পাচ্ছেন।

বিসিএস উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত নন, এমন প্রার্থীদের দুই ধরনের নন-ক্যাডারে চাকরি দেওয়া হয়।

১. জেনারেল (এই চাকরিগুলোতে সব ডিসিপ্লিনের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়)।

২. টেকনিক্যাল (চাকরির পদসংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়)।

বিসিএস পরীক্ষার জন্য কখন থেকে পড়া শুরু করবেন এবং কিভাবে পড়বেনঃ

প্রথমেই নিজের মাইন্ড সেট করে ফেলতে হবে। বিসিএস অন্য যেকোন একটি পরীক্ষার মতই একটি পরীক্ষা। তবে সেটা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন পরীক্ষা। তাই এই পরীক্ষায় পাশ করতে পড়াশুনা করতে হবে নিয়মিত। অনেক প্রার্থীর টেবিলে দিনের পর দিন বিসিএস এর বই পরে থাকে। কেউ খুলেও দেখেন না। আজকে পড়ব, কালকে পড়ব এভাবে করে মাসের পর মাস চলে যায়। বইয়ের উপর ধুলো পড়ে, কিন্তু পড়া আর হয় না। তাই শুধু বই কিনে জমা করলেই হবে না। সিরিয়াস হয়ে সেই বইগুলো প্রতিদিন পড়তে হবে।আপনার যদি ইচ্ছা থাকে বিসিএস এ যোগ দেবার, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই পড়া শুরু করা উচিত। শুধুমাত্র বিসিএসকে টার্গেট রেখে সিলেবাস অনুযায়ী নিয়মিত পড়াশুনা করতে হবে। 

প্রস্তুতির পূর্বেই বিসিএস এর সিলেবাস প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া জরুরী। সিলেবাসের বাইরে সাধারনত কোন প্রশ্ন আসে না। সিলেবাস দেখে কোন বিষয়ে পারদর্শী আর কোন বিষয়ে দূর্বলতা বুঝা উচিত। ধরেন আপনি সিএসইতে পড়াশুনা করছেন। তাহলে আপনার জন্য কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয় অনেক সহজ। সুতরাংএই বিষয়ে অন্যদের থেকে আপনার কম পড়া লাগবে। এই সময়ে আপনি অন্য বিষয় পড়তে পারবেন।

বিসিএস এর ইতিহাসে প্রতিবারই পূর্বের প্রশ্ন থেকে কিছু রিপিট হয়। তাছাড়া পূর্বের প্রশ্নগুলো সলভ করলে বিসিএস পরীক্ষা সম্পর্কে বাস্তবিক জানা যাবে। বাজারে প্রচলিত অনেক বই ই আছে। যেকোন একটা কিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বা ২য় বর্ষেই ফাঁকে ফাঁকে পড়ে ফেলা উচিত।

পত্রিকার গুরুত্ব অপরিসীম। পত্রিকার লিখা পড়লে বিসিএস এর  লিখিত পরীক্ষায় অনেক কাজে দিবে। তাছাড়া বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন আসে। এই ২ বিষয়ের প্রশ্নগুলো সাধারনত পত্রিকা থেকেই করেন প্রশ্ন কর্তারা। তাই নিয়মিত পত্রিকা পড়লে এগুলো থেকে সহজেই উত্তর করা যাবে।

আরো জানতে ক্লিক করুন: 

৪৬ তম বিসিএস সার্কুলার ২০২৩

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতি ২০২৩

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রস্তুতি A to Z

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি A to Z

পুলিশের এসআই রিটেন পরীক্ষার প্রস্তুতি

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (DNC) নিয়োগ 2023

৭০৭ পদে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৩

এরকম আরো টিপস পেতে আমাদের সাইট টি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর হ্যাঁ অপনি যদি একজন চাকুরিপ্রার্থী হন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা অন্যান্য চলমান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো দেখতে পারেন। আপনি চাইলে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি আপনার বন্ধু-বান্ধব কাছের লোকদের সাথে শেয়ার করতে পারেন নিচে থাকার শেয়ার বাটন থাকে। আর যারা এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে আবেদন করতে ইচ্ছুক তারা  কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে খুব শীঘ্রই আবেদন করুন। ধন্যবাদ শেষ অবধি সাথে থাকার জন্য।

x