কিভাবে নামাজ আদায় করবো

কিভাবে নামাজ আদায় করবো

na

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কিত লেখায় আপনাকে স্বাগতম। ইসলাম ধর্মের পাঁচটি রুকন অর্থাৎ পাঁচটি প্রধান জিনিস রয়েছে। ঈমানের পর সর্ব শ্রেষ্ঠ আমল হচ্ছে নামাজ। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা অনেকেই নামাজ পড়তে জানি না। নামাজ পড়লেও সঠিকভাবে কীভাবে নামাজ পড়তে হয় তা জানি না। নামাজ বা সালাত হলো আমাদের ইসলাম ধর্মের প্রধান উপাসনাকর্ম।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

নামাজ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাজই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম।নামাজকে বলা হয় জান্নাতের চাবি। শুধু যে পরকালিন সমৃদ্ধি রয়েছে নামাজ পড়াতে, তা কিন্তু নয়। স্বেচ্ছায় ও মনোযোগ সহকারে নামাজ পড়লে বান্দার মনে সবসময় আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের প্রতি সচেতনতা থাকে। ফলে একজন প্রকৃত নামাজি ব্যক্তি সর্বদাই নিজেকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং ভালো কাজ করতে চেষ্টা করেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম:

কিভাবে নামাজ আদায় করবো ? সর্বপ্রথম অজু করে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে এবং নিয়ত করতে হবে। এরপর আল্লাহু আকবার বলে তাকরিমে তাহরিমা অর্থাৎ হাত বাঁধতে হবে। এরপর মনে মনে ছানা পরতে হবে।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

ছানা:- “সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তা’আলা জাদ্দুকা, ওয়া লা ইলাহা গইরুক।”

  • এরপর আউযুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। এরপর আবার বিসমিল্লাহ বলে একটি ছোট সূরা পড়বেন। অবশ্যই এটা নিঃশব্দে পড়তে হবে।
  • এরপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবেন। রুকুতে গিয়ে পাঠ করবেন, “সুবহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আযিম”
    কমপক্ষে তিনবার পাঠ করবেন এবং বেশি পাঠ করলে বেজোড় সংখ্যক পাঠ করবেন।
  • এরপর “সামি আল্লাহু লিমান হামিদা” বলে সোজা দাঁড়াবেন। দাঁড়ানোর পর বলবেন “রাব্বানা লাকাল হামদ্”
  • এরপর আল্লাহু আকবার বলে সেজদাতে চলে যাবেন। খেয়াল রাখবেন সবার আগে হাঁটুর জমিনে লাগবে এরপর দুই হাত এবং পরে নাক ও কপাল।
  • সেজদায় গিয়ে বলবেন “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা”
  • সর্বনিম্ন তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে বসবেন। দুই তিন সেকেন্ড অপেক্ষা করে আবারো আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সেজদা করবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো
  • দ্বিতীয় সেজদায় তসবিহ্ পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে সোজা দাঁড়াবেন।
  • এবার প্রথম রাকাআতের মতো আবারও নিঃশব্দে সুরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পাঠ করবেন এবং রুকু ও সেজদা করবেন।
  • দ্বিতীয় রাকাতে দ্বিতীয় সিজদার পর আল্লাহু আকবার বলে বসবেন। এই বসাকে বলে “আখেরি বৈঠক”
  • এখন আপনি তাশাহুদ পাঠ করবেন। কিভাবে নামাজ আদায় করবো

কিভাবে নামাজ আদায় করবোঃ

  • তাশাহুদ:- “আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্ ত্বায়্যিবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, আসসালামু আলাইনা ওয়া ‘আলা ইবাদিল্লাহিস সলিহিন, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।”
  • তাশাহুদ পাঠের পর দুরুদে ইব্রাহিম পাঠ করবেন।
  • দুরুদ শরীফ:- আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
  • আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
  • এরপর দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করবেন।
  • দোয়ায়ে মাসুরা:- আল্লাহুম্মা ইন্নি যালামতু নাফসি যুলমান কাসিরাওঁ ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয জুনূবা ইল্লা আন্তা, ফাগফির লি মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ার হামনি ইন্নাকা আন্তাল গফুরুর রহিম।
  • দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ শেষ হলে, ডানদিকে সালাম ফিরাবেন আর বলবেন “আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ”
  • অতঃপর বামদিকে একই বাক্য পাঠ করে সালাম ফিরাবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

আলহামদুলিল্লাহ, এভাবে আপনি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করবেন।

ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম:

ফরজ দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত : “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

  • নিয়ত করার পর প্রথমে যেভাবে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েছেন এটাও একই ভাবে পড়বেন কিন্তু কিছু পরিবর্তন আছে।

১. এই নামাজের নিয়ত হতে হবে ফজরের ফরজ নামাজ এর।
২. এই নামাজে তেলাওয়াত অর্থাৎ সূরা গুলো উচ্চ স্বরে পাঠ করবেন।
৩. যেভাবে সুন্নত নামাজে সবগুলো তসবিহ্ আদায় করেছেন এখানেও সেভাবেই তসবিহ্ আদায় করবেন।
৪. আলহামদুলিল্লাহ আপনি শিখে গেলেন কীভাবে ফজরের ফরজ নামাজ পড়তে হয়। কিভাবে নামাজ আদায় করবো

জোহরের নামাজ পড়ার নিয়ম:

  • জোহরের নামাজ প্রথমে চার রাকাআত সুন্নাত।
  • এরপর চার রাকাআত ফরজ।
  • তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত।

জোহরের প্রথম চার রাকাআত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ত: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লা তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

যেভাবে আপনি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েছেন ঠিক একইভাবে একই তরিকায় জোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়তে হবে। কিছু ক্ষেত্রে একটু পার্থক্য আছে।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

  1. প্রথম দুই রাকাআত নামাজে আখেরি বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পাঠ করবেন।
  2. তাশাহুদ পাঠ করে আল্লাহ বলে সোজা দাঁড়িয়ে যাবেন এবং পূর্বের শেখানো নিয়ম অনুসারে আবার নামাজ পড়া শুরু করবেন।
  3. উল্লেখ্য যে, এই চার রাকাত নামাজে প্রতিবার সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর অন্য একটি সূরা পাঠ করতে হবে।
  4. চতুর্থ রাকাআতে শেষ বৈঠকে পূর্বের ন্যায় তাশাহুদ, দুরুদ ও দোয়ায়ে মাসুরা পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন। কিভাবে নামাজ আদায় করবো

জোহরে চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম:

জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি সালাতিজ জোহরি ফারজুল্লাহি তাআল মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

যেভাবে আপনি যোহরের চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েছেন। এভাবেই আপনাকে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়তে হবে তবে কিছু পার্থক্য আছে। কিভাবে নামাজ আদায় করবো

  1. ফরজ নামাজ পড়ার পূর্বে ইকামত দিতে হবে।
  2. নিয়ত ফরজ নামাজের করতে হবে।
  3. নিঃশব্দে তেলাওয়াত করতে হবে।
  4. যোহরের ফরজ নামাজের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাআতের তেলওয়াতে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করবেন। অন্য কোনো সূরা পাঠ করবেন না।
  5. যথারীতি চতুর্থ রাকাআতের শেষ বৈঠকে দোয়া গুলো পাঠ করে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

জোহরের শেষ দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম:

সুন্নত নামাজের নিয়ত : “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকায়াতাই সালাতিজ জোহরি সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

যেভাবে আপনি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েছেন সেভাবেই জোহরের শেষ দুই রাকাত সুন্নত পড়বেন।

আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম:

আসরের চার রাকাআত নামাজ পড়া ফরজ। তবে ফরজের আগে চার রাকাআত সুন্নাত নামাজ রয়েছে তবে সেটা না পড়লেও কোনো গুনাহ্ নেই।

আসরের চার রাকাআত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম:

আসরের চার রাকাআত ফরজ নামাযের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা আরবাআ রাকায়াতি সালাতিল আছরি ফারজুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

যেভাবে আপনি জোহরের ফরজ চার রাকাআত নামাজ আদায় করেছেন, ঠিক সেভাবেই আসরের চার রাকাআত ফরজ নামাজ আদায় করবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

মাগরিবের নামাজ পড়ার নিয়ম:

মাগরিবে প্রথম তিন রাকাআত নামাজ ফরজ। এরপর দুই রাকাআত সুন্নাত।

মাগরিবের তিন রাকাআত ফরজ নামাযের নিয়ত : “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাকয়াতি সালাতিল মাগরিব ফারজুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

মাগরিবের তিন রাকাআত ফরজ নামাজে কিছু পার্থক্য রয়েছে।

  1. মাগরিবের তিন রাকাআত ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতের তেলাওয়াত উচ্চ স্বরে হবে। তৃতীয় রাকাআতে শুধু সুরা ফাতেহা পাঠ করবেন এবং নিঃশব্দে।
  2. দ্বিতীয় রাকাতের বৈঠকে শুধু তাশাহুদ পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে উঠে দাঁড়াবেন। এরপর তৃতীয় রাকাআত শুরু করবেন।
  3. যথারীতি এই নামাজের আখেরি বৈঠকে দোয়া সমূহ পাঠ করে সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাত নামাযের নিয়ম:

মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নাত নামাযের নিয়ত : “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকয়াতাই সালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

এর পূর্বের ওয়াক্ত সমূহে যেভাবে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পাঠ করেছিলেন এটাও সেভাবেই পাঠ করবেন।

এশার নামাজ পড়ার নিয়ম:

এশার নামাজে প্রথম চার রাকাআত ফরজ। এরপর দুই রাকাআত সুন্নত। অতঃপর তিন রাকাআত বিতর। বিতর পড়া ওয়াজিব।

এশার চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম:

এশার চার রাকায়াত ফরজ নামাজের নিয়ত : “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবাআ রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

যেভাবে আপনি যোহর ও আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়েছেন এখানেও সেভাবেই পড়তে হবে। পার্থক্য শুধু দুটি।

  • ১. নিয়ত এশার নামাজের করতে হবে।
  • ২. প্রথম দুই রাকাতের তেলাওয়াত উচ্চস্বরে করতে হবে।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

এশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম:

সুন্নাত নামাজের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকায়াতি সালাতিল এশায়ি সুন্নাতু রাসুূলিল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

পূর্বের বর্ণিত দুই রাকাত সুন্নত নামাজের মতো এখানেও সেভাবেই আদায় করবেন।

তিন রাকাত বিতেরের নামাজের নিয়ম:

তিন রাকায়াত বেতের নামাজের নিয়ত: “নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা ছালাছা রাকায়াতি সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লাহি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।”

আপনি যেভাবে মাগরিবের তিন রাকাআত নামাজ আদায় করেছেন, এটাও সেভাবে আদায় করতে হয় তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন রয়েছে। কিভাবে নামাজ আদায় করবো

  • ১. এই নামাজ একা পাঠ করলে নিঃশব্দে পাঠ করাই উত্তম।
  • ২. এই নামাজের তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহার পর অন্য একটি সূরা পড়তে হয়।
  • ৩. তৃতীয় রাকাতে অন্য একটি সূরা পাঠ করার পর আল্লাহু আকবার বলে কান পর্যন্ত হাত ওঠাতে হয় এবং তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ হাত বাঁধতে হয়।
  • ৪. শেষ তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ হাত বাঁধার পর দোয়ায়ে কুনুত পড়তে হয় এবং এটা পড়া ওয়াজিব।

দুয়ায়ে কুনুত বাংলা উচ্চারণ:

“আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাইনুকা, ওয়া নাস্তাগফিরুকা, ওয়া নুমিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনি ‘আলাইকাল খইর, ওয়া নাশকুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ, ওয়া নাতরুকু মাই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লি, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ক।”

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম

অসুস্থ অবস্থায় নামাজ পড়ার নিয়মঃ

ইসলামে প্রতিদিনই নামাজ পড়া ফরজ। না পড়লে কবিরা গুনাহ্ হবে এবং আখিরাতে এজন্য কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু আপনি যদি অসুস্থ থাকেন তথা নামাজ পড়ার মতো অবস্থা না থাকে, তখন কি করবেন?

আপনি চাইলে বসে কিংবা শুয়েও নামাজ আদায় করতে পারবেন। শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্য। ইসলামের বিধিবিধান সার্বজনীন। ফলে সবার জন্যই ব্যবস্থা থাকে। তবে, এখানে শর্ত হলো, আপনি একদমই দাঁড়াতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে যদি বসে পড়ার মতো অবস্থা থাকে, তাহলে বসেই পড়তে হবে।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

আবার যদি এমন হয়, দাঁড়াও যেমন সম্ভব না তেমনি বসার মতোও সামর্থ্য নেই। সেক্ষেত্রে আপনি শুয়ে পড়ার সুযোগ পাবেন। ইচ্ছাকৃত আলসেমি করে বসে বা শুয়ে নামাজ পড়া যাবে না।

যদি অসহনীয় ও অস্বাভাবিক ব্যথা না হয়, অর্থাৎ সামান্য ব্যথা অনুভব হয়, তাহলে সেটা শরিয়তের দৃষ্টিতে শারীরিক অক্ষমতা বলে বিবেচিত হবে না। এমতাবস্থায় বসে বা শুয়ে নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই। এখানে এ বিষয়গুলি বিস্তারিত আলোচনা করব।

বসে নামাজ পড়ার নিয়মঃ

আগেও বলেছি, ইসলাম কারও সাধ্যের চেয়ে বেশি কাজ চাপিয়ে দেয় না। তাই, কেউ দাঁড়াতে অপারগ হলে বসে সালাত আদায় করতে পারবেন। তবে, এক্ষেত্রে এটুকু নিশ্চিত হতে হবে যে, দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে একদমই সক্ষম নন কেউ।

এক্ষেত্রে নামাজের সকল নিয়ম আগের মতোই হবে। কিছুটা পার্থক্য থাকবে বটে। দাঁড়ানোর বদলে বসে আদায় করবেন। এক্ষেত্রে রুকুতে কিছুটা ঝুঁকবেন এবং সিজদাতে অনেকটাই ঝুঁকবেন এবং মাথাও নামাবেন (যতটা সম্ভব)। [দুররে মুখতার : ২/৫৬৬]কিভাবে নামাজ আদায় করবো

চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ পড়ার নিয়মঃ

কেউ যদি বসে নামাজ আদায় করতে গিয়ে সরাসরি কোথাও বসার সুযোগ না পায় এবং চেয়ারের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে চেয়ারে নামাজ আদায় করতে পারবেন। কিন্তু যদি সমতল ভূমিতে বসে সালাত আদায় করার মতো অবস্থা থাকে, তাহলে চেয়ারে বসে সালাত আদায় করা জায়েজ হবে না।

চেয়ারেও নামাজ পড়া যাবে, বসে নামাজ পড়ার নিয়মেই। [দুররে মুখতার: ২/৫৬৬]

শুয়ে ইশারায় নামাজ পড়ার নিয়মঃ

শুয়ে নামাজ পড়ার পদ্ধতি সবচেয়ে সহজ। আপনি যখন অনেক অসুস্থ হওয়ায় শুয়ে থাকতে হয় এবং কোনভাবেই দাঁড়াতে বা বসতে পারছেন না কিছুটা সময়, তখন আপনি শুয়ে নামাজ আদায় করবেন। এভাবে সালাতের জন্য প্রথমে নিয়ত করবেন। এরপর কিয়ামের কাজ করবেন। যতটুকু পারেন মাথা নুয়ে রুকু করবেন। আরেকটু অধিক পরিমান নুয়ে সিজদা করবেন। মানে যতটুকু আপনার দ্বারা সম্ভব ততটা করে আপনি সালাত শেষ করবেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

নামাজ শেষে মোনাজাত করার নিয়ম:

“রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাও ওয়াফিল আখিরাতি হাছানাতাও ওয়া কিনা আযাবান্নার। ওয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলা খাইরি খালক্বিহি মুহাম্মাদিও ওয়া আলিহি ওয়াআছহাবিহি আজমায়ীন, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।”

ছুটে যাওয়া নামাজ যেভাবে আদায় করবেনঃ

ঈমানের পর একজন মুসলমানের জন্য সবচে বড় আবশ্যক বিষয় হল; সময়মতো নামাজ আদায় করা। এ সম্পর্কে বহু আয়াত ও হাদিস এসেছে। এবং সময়মতো নামাজ না পড়লে অনেক ধমক এসেছে।

রোজা, হজ ইসলামের মৌলিক ইবাদত ও ঈমানের স্তম্ভ। সেগুলো ছুটে গেলে কাজা করা আবশ্যক। নামাজও ঈমানের স্তম্ভ এবং রোজা ও হজ থেকেও আরো বড় আমল। তাই নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা করা আরো বেশি আবশ্যক।

এটি ইসলামের নির্দেশ। অনেক হাদিসে বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে। সকল সাহাবা তাবেয়ীনের ফতওয়া ও নির্দেশনা এটাই। বরং সাহাবা তাবেয়ীন থেকে নিয়ে গোটা উম্মতের সর্বসম্মত বক্তব্যও তাই।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবূ সাঈদ খুদরী রা. বলেন, খন্দকের দিন আমরা নামাজ পড়তে পারিনি। এমনকি মাগরিবের পরও দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেলাল রা.-কে ডেকে পাঠালেন। তিনি ইকামত দিলেন। আল্লাহর রাসুল সুন্দর করে নামাজ পড়ালেন, যেমন সময়মত নামাজ পড়িয়ে থাকেন। এরপর বেলাল রা.-কে আদেশ করলেন (আসরের ইকামত দিতে) বেলাল রা. ইকামত দিলেন। তিনি আসরের নামাজ সুন্দর করে পড়ালেন, যেভাবে তিনি সময়মত পড়িয়ে থাকেন। অতঃপর মাগরিবের ইকামত দিতে আদেশ করলেন। বেলাল রা. ইকামত দিলেন। তিনি একইভাবে মাগরিব পড়ালেন।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

(মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১১৪৮৩ (সহিহ) আরো দেখুন; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৪৬২, সহিহ বুখারী, হাদিস: ৩৮৮৫)

রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে পড়লে বা নামাজ থেকে উদাসীন হলে, যখন নামাজের কথা মনে পড়বে, তখন যেন সে নামাজ পড়ে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন, তুমি আমার স্মরণে নামাজ আদায় কর।  (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬০১)

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, এক নারী আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আমার মা মান্নত করেছেন হজ করার, কিন্তু তিনি হজ করার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ আদায় করব? আল্লাহর রাসুল বললেন, হ্যাঁ তুমি তার পক্ষ থেকে হজ আদায় কর। তুমি বল তো, তোমার মায়ের উপর যদি মানুষের পাওনা থাকত, তুমি কি তা পরিশোধ করতে না? তোমরা আল্লাহর পাওনা পরিশোধ কর। কেননা আল্লাহর পাওনা পরিশোধের বেশি উপযুক্ত।  (সহিহ বুখারী, হাদিস: ৭৩১৫) কিভাবে নামাজ আদায় করবো

এ হাদিসে হজকে বান্দার পাওনার সাথে তুলনা করা হয়েছে। অর্থাৎ বান্দার পাওনা যেমন পরিশোধ করতে হয় তেমনি হজ না করে থাকলে তা আদায় করতে হবে। কেননা তা আল্লাহর পাওনা।

হজ যেমন বান্দার উপর আল্লাহর পাওনা তেমনি নামাজও বান্দার উপর আল্লাহর পাওনা। তাই নামায কাজা হয়ে গেলে তাও আদায় করতে হবে।

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, অধিক কাজা নামায আদায়ে মনোযোগী হওয়া নফল পড়া থেকে উত্তম। (মাজমুউল ফাতাওয়া ২২/১০৪)

উল্লেখ্য, ছুটে যাওয়া নামায কাজা করার আবশ্যকতার বিষয়ে সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন, চার ইমামসহ সকল ওলামায়ে উম্মত এক্ষেত্রে একমত।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

পঞ্চম শতাব্দীর বিশিষ্ট আলেম আল্লামা ইবনে আব্দুল বার রহ. বলেন- ফরজ রোজার মত ফরজ নামাজও সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে কাজা করতে হয়। যদিও উম্মতের ইজমা ও ঐকমত্যই দলিল হিসেবে যথেষ্ট, যাদের অনুসরণ করা ও যাদের পথ থেকে বের না হওয়া ঐসব বিচ্ছিন্ন মতের প্রবক্তাদের জন্যও অপরিহার্য ছিল। তারপরও কিছু দলিল উল্লেখ করা হল; রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন…।  (আল ইসতিযকার ১/৪৮)

তার কথায় স্পষ্ট যে, কুরআন হাদিসের দলিল ছাড়াও ছুটে যাওয়া নামাজ আদায়ের আবশ্যকতার ক্ষেত্রে পুরো উম্মতের ইজমা রয়েছে। আর এক্ষেত্রে ইজমা ছাড়া অন্য কোন দলিল যদি নাও থাকে তাহলেও ইজমাই যথেষ্ট। আর তিনি এ কাজা করাকে মুমিনদের পথ বলেছেন। যার উপর অবিচল থাকতে কুরআনে আদেশ করা হয়েছে। এবং তা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে সতর্ক করা হয়েছে।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

পক্ষান্তরে সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন ও মুজতাহিদ ইমামগণসহ কোন এক ইমাম থেকে এমন ফতওয়া পাওয়া যাবে না যে, তিনি কাজা আদায় না করার ফতওয়া দিয়েছেন। সাথে সাথে তারা এক্ষেত্রে কোন একটি আয়াত বা হাদীসও উল্লেখ করতে পারবে না, যাতে বলা হয়েছে বা যা থেকে বোঝা যায় যে, কাজা লাগবে না।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

সকল প্রকার চাকরির খবর জানতে ক্লিক করুন :

http://www.chakrirbazer.com

Bengali Inspirational quotes//অনুপ্রেরণামূলক উক্তি

ALL ABOUT LGED

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তুতি A to Z

ভাইভা প্রস্তুতি

এরকম আরো টিপস পেতে আমাদের সাইট টি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর হ্যাঁ অপনি যদি একজন চাকুরিপ্রার্থী হন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটে থাকা অন্যান্য চলমান নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো দেখতে পারেন। আপনি চাইলে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি আপনার বন্ধু-বান্ধব কাছের লোকদের সাথে শেয়ার করতে পারেন, নিচে শেয়ার বাটন থাকে। আর যারা এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটিতে আবেদন করতে ইচ্ছুক তারা  কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে খুব শীঘ্রই আবেদন করুন। ধন্যবাদ শেষ অবধি সাথে থাকার জন্য।কিভাবে নামাজ আদায় করবো

x